শিরোনাম |
নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, খাদ্য সংকট।চোর ডাকাত ও সাপ আতঙ্কে মানুষ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, খাদ্য সংকট।চোর ডাকাত ও সাপ আতঙ্কে মানুষ নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের (২৫০ শয্যা বিশিষ্ট) আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম গতকাল দুপুরে সাংবাদিকদের জানান, গত তিন দিনে নোয়াখালীতে ৬৩ জনকে সাপে কেটেছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় নতুন করে সাপে কেটেছে ২৮জনকে। বন্যার কারণে ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে ১০৮জন। সেনবাগ উপজেলার বাসিন্দা মো.আবুল খায়ের জানান, ফেনীর মুহুরী নদীর উজানের পানি প্রবেশ করায় জেলার সেনবাগ, বেগমগঞ্জ, সোনাইমুড়ী উপজেলার আরও নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এসব উপজেলায় গত দুদিন বৃষ্টি না হলেও উজানের পানিতে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়। অনেক জায়গায় নতুন করে ঘরবাড়ি ও সড়ক তলিয়ে গেছে। স্কুলে ঢুকে পড়েছে পানি। দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ খাবার পানির সংকট। ![]() নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, খাদ্য সংকট।চোর ডাকাত ও সাপ আতঙ্কে মানুষ বেগমগঞ্জের একলাসপুরের বাসিন্দা ইউসুফ ভূঁইয়া বলেন, বন্যা ও ভারি বর্ষণের কারণে বেগমগঞ্জের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর ফলে দিন মজুর খেটে খাওয়া মানুষ গুলো কাজ করতে না পেরে মানবেতর জীবন যাপন করছে। কর্মহীন মানুষেরা সাহায্যের আবেদন জানিছেন সরকার ও বিত্তশালীদের কাছে। নোয়াখালী জেলা আবহাওয়া অধিদপ্তরের উচ্চ পর্যবেক্ষক আরজুল ইসলাম বলেন,গত ২৪ ঘণ্টায় ৩২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। উজানের পানিতে বন্যার পানি বাড়েছে। বন্যা কবলিত বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, জেলার ৮টি উপজেলার প্রায় ৯০ ভাগ মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছেন। প্রতিটি বাড়িতে ৩ থেকে ৫ ফুট জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নিচু এলাকাগুলো যার পরিমাণ ৬ থেকে ৭ ফুট। বসত ঘরে পানি প্রবেশ করায় বুধবার রাত পর্যন্ত অনেকে খাটের ওপর অবস্থান করলেও বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তারা নিকটস্থ আশ্রয় কেন্দ্র, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদ্গুরাসা গুলোতে অবস্থান নিয়েছেন। বসত ও রান্নাঘরে পানি ঢুকে পড়ায় খাবার সংকটে রয়েছে বেশির ভাগ মানুষ। জেলার প্রধান সড়কসহ প্রায় ৮০ ভাগ সড়ক কয়েক ফুট পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যার পানি ঢুকে পড়ায় গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। শাখা সড়কগুলোতেয পানি বেশি হওয়ায় কোন যান করছেনা। প্রধান সড়ক ও মহা সড়কে যান চলাচল করছে। এদিকে সাধারণ ক্রেতারাগন অভিযোগ করেন, বন্যার অজুহাত দিয়ে কৃত্তিম সংকট সৃষ্টি করে অসাধু ব্যবসায়ীরা কিছু পন্যের দাম দ্বিগুণ বেশিতে বিক্রি করতেছে। নোয়াখালীর প্রধান বানিজ্যিক নগরী চৌমুহনী, চৌরাস্তা, মাইজদী শহর, মাইজদী বাজার, একলাসপুর বাজার, গাবুয়া, বাংলাবাজার, সোনাপুর, সেনবাগ বাজার, সেবার হাট, সোনাইমুড়ী, চাটখিল, কবির হাট, বসুর হাট সহ অধিকাংশ হাট বাজার গুলোতে অসাধু ব্যবসায়ীরা সেন্ডিকেট করে পন্যের দাম অনেক বেশি নিচ্ছে। এলফিজি গ্যাসের বোতল দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতেছে। মুড়ি চিড়া চিনি বেকারির খাদ্য সহ বন্যা রিলেটেড শুকনো খাবার গুলোর দাম কোন কোন স্থান দ্বিগুণ দামে বিক্রি করতেছে। এছাড়া চাল ডাল সহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম ও বেশি দামে বিক্রি করতেছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। এদিকে গত কয়েক দিন থেকে নোয়াখালীর বন্য দূর্গত এলাকায় বিএনপি জামায়াত ইসলামী আন্দোলন খেলাফত মজলিস সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার রান্না করা খাবার সহ ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করছেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বেসরকারি ভাবে বিভিন্ন বিভিন্ন ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। ![]() নোয়াখালীতে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি, খাদ্য সংকট।চোর ডাকাত ও সাপ আতঙ্কে মানুষ জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলার ৯টি উপজেলার মধ্যে আটটি উপজেলার মানুষ বন্যাকবলিত হয়েছে। এসব উপজেলায় ইতোমধ্যে ৮২৬টি আশ্রয়কেন্দ্রে প্রায় ১ লাখ ৫৩ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় প্রায় ২১ লাখ মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় আছেন। এর মধ্যে দুই শিশুসহ তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ১হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার দিয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠপর্যায়ে কাজ করছেন। স্বেচ্ছাসেবকরা কাজ করছেন। এ নিয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ মুমূর্তে আমি বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিন পরিদর্শনে আছি। এ বিষয়ে পরে কথা বলব। গণ/আজাদ ভ্ূঁইয়া |