শুক্রবার ৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৭:১২:২৭ এএম
শিরোনাম রাষ্ট্রপতির সঙ্গে নবনিযুক্ত ২২ বিচারপতির সাক্ষাৎ       ভয়মুক্ত এক সম্প্রীতিময় নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি : প্রধান উপদেষ্টা       আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ সম্পর্কে সঠিক তথ্য তুলে ধরুন : প্রধান উপদেষ্টা       ইইউ’র ২৮ রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে ৯ ডিসেম্বর প্রধান উপদেষ্টার সাক্ষাৎ       ৭ বছরের দণ্ড থেকে আমানকে হাইকোর্টে খালাস       বউয়ের ভারতীয় শাড়ি পুড়িয়ে দিলেন রিজভী       বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে মালয়েশিয়ার প্রতি রাষ্ট্রপতির আহ্বান      
অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ডেরন আসেমোগ্লু, সাইমন জনসন ও জেমস এ রবিনসন
আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
Published : Monday, 14 October, 2024
অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ডেরন আসেমোগ্লু, সাইমন জনসন ও জেমস এ রবিনসন

অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন ডেরন আসেমোগ্লু, সাইমন জনসন ও জেমস এ রবিনসন

স্টকহোমে রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস সোমবার তিন অর্থনীতিবিদ ডেরন আসেমোগ্লু, সাইমন জনসন ও জেমস এ রবিনসনকে আলফ্রেড নোবেলের স্মরণে ২০২৪ সালের অর্থনীতি বিজ্ঞানে নোবেল বিজয়ী ঘোষণা করেছে। রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অফ সায়েন্সেস বলেছে, 'প্রতিষ্ঠান কীভাবে গঠিত হয় এবং সমৃদ্ধিকে প্রভাবিত করে তা নিয়ে গবেষণার জন্য' এই তিন অর্থনীতিবিদকে  পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।

অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে পুরস্কারের কমিটির চেয়ারম্যান জ্যাকব সভেনসন এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, 'বিভিন্ন দেশের মধ্যে আয়ের বিশাল ব্যবধান হ্রাস করা আমাদের সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জগুলোর অন্যতম। মর্যাদাপূর্ণ এ পুরস্কার বিজয়ীরা এটি অর্জনের জন্য সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। এই বছরের বিজয়ীরা বিভিন্ন দেশের সমৃদ্ধিতে এত বিশাল ব্যবধানের কারণ সম্পর্কে নতুন অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করেছেন। তারা দেখিয়েছেন এর গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো সামাজিক প্রতিষ্ঠানে দৃঢ়মূল পার্থক্য।

ইউরোপীয় উপনিবেশকারীদের প্রবর্তিত বিভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থা পরীক্ষা করে, ড্যারন অ্যাসেমোগ্লু সাইমন জনসন ও জেমস রবিনসন প্রতিষ্ঠান ও সমৃদ্ধির মধ্যে সম্পর্ক দেখাতে সক্ষম হয়েছেন। ৫৭ বছর বয়সী অ্যাসেমোগ্লুর জন্ম: ৩ সেপ্টেম্বর ১৯৬৭, ইস্তাম্বুল, তুরস্ক। ও ৬১ বছর বয়সী জনসনের জন্ম: ১৯৬৩, শেফিল্ড, যুক্তরাজ্য। তারা দুজনেই যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এমআইটি)’র অধ্যাপক। ৬৪ বছর বয়সী রবিনসন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। জন্ম: ১৯৬০, যুক্তরাজ্য।

জুরি উল্লেখ করেছেন যে কিছু দেশ কেন ‘নিম্ন অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি’র ফাঁদে আটকা পড়ে, বিজয়ীদের গবেষণা তা ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করে। জুরি বলেছেন, ‘অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রতিষ্ঠানের প্রবর্তন প্রত্যেকের জন্য দীর্ঘমেয়াদী সুবিধা সৃষ্টি করে, কিন্তু শোষণমূূলক প্রতিষ্ঠানগুলো ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের জন্য স্বল্পমেয়াদী লাভ প্রদান করে।

নোবেল কমিটির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে ‘জনসাধারণকে শোষণ করার জন্য তৈরি করা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘমেয়াদী প্রবৃদ্ধির জন্য ক্ষতিকর।’ অপর দিকে ‘যেসব প্রতিষ্ঠান মৌলিক অর্থনৈতিক স্বাধীনতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করে তারা এর জন্য উত্তম। পুরস্কার পেয়ে ‘আনন্দিত’ উল্লেখ করে আসেমোগ্লু সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা যে কাজটি করেছি তা গণতন্ত্রের পক্ষে।

স্টকহোমে পুরস্কার ঘোষণার সময় অ্যাথেন্স থেকে টেলিফোনে অ্যাসেমোগ্লু বলেন, ‘অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা থেকে শুরু করে যেসব দেশ গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করে, তারা শেষ পর্যন্ত অগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার তুলনায় প্রায় আট, নয় বছর দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এবং এটি একটি উল্লেখযোগ্য অর্জন। তবু তিনি স্বীকার করেন যে ‘গণতন্ত্র কোনো মহৌষধ নয়।’ এবং ‘গণতন্ত্র প্রবর্তন করা খুবই কঠিন।

আজ ১৪ অক্টোবর স্থানীয় সময় সকাল ১১টা ৪৫ মিনিট ও বাংলাদেশ সময় বিকেল ৩টা ৪৫ মিনিটে ছয় নম্বর ও সর্বশেষ অর্থনীতি ক্যাটাগরির নোবেল পুরস্কার ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণার মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে এ বছর নোবেল পুরস্কার ঘোষণা শেষ হলো। এখন পর্যন্ত টিকে থাকা বিশ্বের প্রাচীনতম ব্যাংক 'সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক'-এর ৩০০ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে ১৯৬৮ সালে আলফ্রেড নোবেলের স্মৃতি স্মরণে এ পুরস্কার চালু করা হয়। সুইডেনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক  এ পুরস্কারের তহবিল জোগান দেয় এবং  নোবেল ফাউন্ডেশন এ পুরস্কার পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে থাকে।

১৯৬৯ সালে ডাচ অর্থনীতিবিদ জ্যান টিনবার্গেন ও নরওয়েজিয়ান অর্থনীতিবিদ রাগনার ফ্রিশকে 'অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বিশ্লেষণ ও প্রয়োগের গতিশীল মডেল তৈরির জন্য' প্রথম পুরস্কার প্রদান করা হয়। সর্বশেষ গত বছর ২০২৩ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান আমেরিকান অর্থনীতিবিদ ক্লডিয়া গোল্ডিন। গোল্ডিনকে 'নারী শ্রম বাজারের ফলাফল সম্পর্কে আমাদের বোঝাপড়া বাড়ানোর জন্য' নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। তিনি তৃতীয় নারী হিসেবে অর্থনীতিতে পুরস্কার জিতেন।

১৯৬৯ সাল থেকে সম্মানিত ৯৩ জন বিজয়ীর মধ্যে, মাত্র তিনজন মহিলা - ২০২৪ সালে গোল্ডিন, ২০০৯ সালে তার স্বদেশী এলিনর অস্ট্রম ও ২০১৯ সালে ফরাসি-আমেরিকান এসথার ডুফ্লো। প্রথা অনুযায়ী অক্টোবর মাসের প্রথম সোমবার হিসেবে ৭ অক্টোবর চিকিৎসা শাস্ত্রে নোবেল পুরস্কার বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়। 

সোমবার যৌথভাবে দুই মার্কিন বিজ্ঞানী ভিক্টর অ্যামব্রোস ও গ্যারি রাভকানকে চিকিৎসা বা ওষুধশাস্ত্রে ২০২৪ সালের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। 

ক্যারোলিনস্কা ইনস্টিটিউটের নোবেল অ্যাসেম্বলি জানায়, ‘অণু-আরএনএ এবং পোস্ট-ট্রান্সক্রিপশনাল জিন নিয়ন্ত্রণে এর ভূমিকা আবিষ্কারের জন্য’ তাদের এই পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্স জন জে. হপফিল্ড ও জিওফ্রে ই. হিন্টনকে যৌথভাবে ২০২৪ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। 

একাডেমি জানায়, ‘কৃত্রিম নিউরাল নেটওয়ার্কের সঙ্গে মেশিন লার্নিং সক্ষম করে তোলোর বুনিয়াদি আবিষ্কার ও উদ্ভাবনের জন্য’ তাদের পুরস্কার দেওয়া হয়। 

বুধবার রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস মার্কিন বিজ্ঞানী ডেভিড বেকারকে কম্পিউটেশনাল প্রোটিন ডিজাইনের জন্য’ এবং ব্রিটিশ বিজ্ঞানী ডেমিস হাসা বিস ও জন এম. জাম্পারকে ‘প্রোটিন গঠন পূর্বাভাসের জন্য’ যৌথভাবে ২০২৪ সালের রসায়নে নোবেল পুরস্কারজয়ী ঘোষণা করে। 

বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার ম্যান বুকার বিজয়ী কথাশিল্পী, প্রাবন্ধিক, ছোট গল্পকার ও ঔপন্যাসিক হান কাংকে ২০২৪ সালের নোবেল সাহিত্য পুরস্কার বিজয়ী ঘোষণা করা হয়। নোবেল পুরস্কারের জন্য প্রতিবছর ৩০০ জনের একটি তালিকা তৈরি করা হয়। এরপর যাচাই-বাছাই শেষে বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে এক বা একাধিক ব্যক্তিকে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। 

রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস ১৯০১ সাল থেকে প্রতিবছর এই পুরস্কার প্রদান করে। সুইডিশ বিজ্ঞানী ও ডিনামাইটের উদ্ভাবক আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর পাঁচ বছর পর থেকে তাঁর নামে ও রেখে যাওয়া অর্থে এই পুরস্কার দেওয়া হয়। ১৯৬৯ সালে এতে যুক্ত হয় অর্থনীতি। 

প্রতিবছর আলফ্রেড নোবেলের মৃত্যুর দিবস ডিসেম্বরের ১০ তারিখ বিজয়ীদের হাতে পুরস্কারের অর্থ তুলে দেওয়া হয়। প্রতি ক্ষেত্রে পুরস্কার বিজয়ীরা একটি স্বর্ণপদক, শংসাপত্রসহ একটি ডিপ্লোমা এবং বর্তমানে ১১ মিলিয়ন সুইডিশ ক্রোনার পান।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »







সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com