মঙ্গলবার ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:১২:১৮ পিএম
শিরোনাম মংডু শহরও পুরোপুরি দখল নিয়েছে দেশটির সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি        বাংলাদেশ সম্পর্কে অপতথ্য ঠেকাতে ইইউ কূটনীতিকদের সহযোগিতা চান প্রধান উপদেষ্টা       মুরাদনগর উপজেলা বিসিএস ক্যাডার অফিসার্স ফোরাম এর সভাপতি মাহমুদুল এবং সম্পাদক নূরুল হক        ঘিওরে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে সাবেক ছাত্রদল নেতা লাভলু নিহত       ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডাকাত সর্দারসহ ৫ জন গ্রেপ্তার       ভারতে সাথে আমদানি বাণিজ্য ও রাজনীতিকে একসাথে দেখছি না: খাদ্য উপদেষ্টা       হোমনা সরকারি কলেজের অধ্যাপক খুর্শিদুজ্জামান আর নেই      
৮ দফা দাবি, লালদীঘিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাবেশ, ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক :
Published : Friday, 25 October, 2024
৮ দফা দাবি,  লালদীঘিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাবেশ, ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা

৮ দফা দাবি, লালদীঘিতে হিন্দু সম্প্রদায়ের সমাবেশ, ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা

আট দফা দাবিতে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে গণসমাবেশ করেছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সংগঠন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ। আজ শুক্রবার বিকেলে অনুষ্ঠিত সমাবেশ থেকে বিভাগ, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সমাবেশ শেষে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের ঘোষণা দেওয়া হয়। সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী। তিনি বলেন, ‘সনাতনীদের এ দেশ থেকে উৎখাতের চেষ্টা হলে পরিণতি ভয়াবহ হবে। যে মঞ্চ থেকে স্বাধীনতার ছয় দফা দাবি উঠেছিল, সেই মাঠে বাংলাদেশের সব মঠ–মিশনের সাধুরা সমবেত হয়েছেন সনাতনীদের দাবি আদায়ে। সনাতনীদের ওপর যতই নিপীড়ন হবে, আমরা তত বেশি ঐক্যবদ্ধ হব। দাবি আদায়ে বিভাগ ও জেলায় সমাবেশ শেষে আমরা ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করব। ট্রাইব্যুনাল গঠন করে সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিচার, সংখ্যালঘু কমিশন সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন এবং দুর্গাপূজায় পাঁচ দিন ছুটি আট দফা দাবির মধ্যে অন্যতম।

‘আমার মাটি আমার মা, এ দেশ ছেড়ে কোথাও যাব না’সহ নানা স্লোগান দিয়ে হাজার হাজার নারী-পুরুষ মিছিল এবং দল বেঁধে এই সমাবেশে যোগ দেন। বেলা আড়াইটার পর থেকে চট্টগ্রাম নগর এবং বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে লোকজন সমাবেশে আসতে শুরু করেন। বেলা তিনটার মধ্যে লালদীঘি মাঠ ভর্তি হয়ে আশপাশে ছড়িয়ে পড়েন মানুষ। বকশিবিট থেকে শুরু করে কে সি দে রোড, জেল রোড, লালদীঘির চারপাশ ও কোতোয়ালি মোড় পর্যন্ত ছিল লোকে লোকারণ্য। সমাবেশে যোগদানকারীদের হাতে ছিল বিভিন্ন স্লোগানের ব্যানার–ফেস্টুন।

প্রধান বক্তা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী আরও বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের উৎখাত করে শান্তিতে থাকার চেষ্টা করেন, তাহলে এ ভূমি আফগানিস্তান হবে, সিরিয়া হবে। সাম্প্রদায়িক আচরণ করে বাংলাদেশের কোনো গণতান্ত্রিক শক্তি রাজনীতি করার সুযোগ পাবে না। ক্ষমতার পটপরিবর্তন হচ্ছে বারবার, এ দেশে স্থিতিশীলতা আসছে না। কারণ, সহনশীলতা লুপ্ত হচ্ছে। সম্মানবোধ হারিয়ে যাচ্ছে, শিক্ষককে পদত্যাগ করানো হচ্ছে। শুধু সংখ্যালঘু পরিচয়ে ৯৩ জনকে পুলিশের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ভেটেরিনারি ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে হিন্দুদের চিহ্নিত করা হচ্ছে। মাঝখানে কিছুদিন এমন অপকর্ম থেমে গিয়েছিল। এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আমরা আর নীরব থাকব না।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী আরও বলেন, ‘কেউ যদি রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনায় জড়িত থাকেন, তাঁদের আসামি করুন, বিরোধিতা করব না। কিন্তু বেছে বেছে মামলায় আসামি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছিল চারটি মূলনীতিতে। আমাদের দলীয় পরিচয়ে মনোনয়ন দেওয়া হয়। হিন্দুদের অস্তিত্বের কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না। আমরা গণতন্ত্রের নামে প্রহসনকে মেনে নেব না। আমরা সংখ্যানুপাতিক হারে সংসদে আসন চাই। 

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘বাংলাদেশে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে-আমাদের আপত্তি নাই। কিন্তু দ্বিতীয়–তৃতীয় শ্রেণির নাগরিক হয়ে সংবিধান সংশোধনকে মানব না। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি হিন্দু হয়েছেন। আর এ দেশে একজন করে ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছেন। জে এম সেন হলে মামলায় আসামিদের জামিন হয়ে গেল। আমাদের ধর্মের অনুভূতিতে আঘাত হানলে জামিন পায়। আর হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় অনুভূতির কথা বলে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠানো হচ্ছে।

চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘এটা সুশৃঙ্খল আন্দোলন, রাজনৈতিক আন্দোলন নয়। আজকের সমাবেশে নানা প্রোপাগান্ডা করা হয়েছে। আমাদের সমাবেশকে রাজনৈতিক ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বলেন, ‘এ দেশের জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ রয়েছি এখনো, নিঃশেষিত হইনি। এলাকায় এলাকায় একেকটা যুব গোষ্ঠী গড়ে তুলুন। আমাদের দেবালয় আমরা পাহারা দেব। পটিয়া পাঁচরিয়া তপোবন আশ্রমের অধ্যক্ষ রবীশ্বরানন্দ পুরী মহারাজ বলেন, ‘এই দেশ আমার, এই মাটি আমার। এখানকার স্বাধিকারের জন্য বিপ্লবী সূর্য সেনরা জীবন দিয়েছেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব। এই আন্দোলন আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার আন্দোলন।’ আন্দোলন চালিয়ে নেওয়ার জন্য বিভিন্ন মঠ–মন্দিরের মহারাজ, পুরোহিতদের সমন্বয়ে একটা কমিটি গঠন করা হয় বলে জানান তিনি।

সমাবেশে কৈবল্যধাম আশ্রমের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য বলেন, ‘সনাতনী সমাবেশ যাতে উজ্জীবিত হয়, এ জন্য ঐক্যবদ্ধ হোন। সনাতনী সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন, ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে। গোপীনাথ দাস ব্রহ্মচারী বলেন, যে নতুন বাংলাদেশ গঠন করা হলো, সেখানে প্রশাসনের ব্যবস্থা থাকার পরও কেন ষষ্ঠী পূজার দিন প্রতিমা ভাঙা হলো? বিসর্জনে কেন ঢিল ছোড়া হলো? এসবের জবাব দিতে হবে।

গৌরাঙ্গ দাস ব্রহ্মচারীর সঞ্চালনায় গণসমাবেশে আরও বক্তব্য দেন শংকর মঠ ও মিশনের অধ্যক্ষ তপনানন্দ গিরি মহারাজ, ইসকন প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণ মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলারাজ গৌর দাস ব্রহ্মচারী, বাঁশখালী ঋষিধামের মোহন্ত সচিদানন্দ পুরী মহারাজ, কৈবল্যধামের মহারাজ কালিপদ ভট্টাচার্য, স্বামী গোপীনাথ মহারাজ প্রমুখ।



« পূর্ববর্তী সংবাদপরবর্তী সংবাদ »





আরও খবর


সর্বশেষ সংবাদ
⇒সর্বশেষ সব খবর...
সর্বাধিক পঠিত
সম্পাদক, প্রকাশক ও মুদ্রাকর: মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন জিটু
সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : প্ল্যানার্স টাওয়ার, ১০তলা, ১৩/এ বীর উত্তম সি আর দত্ত রোড, বাংলামটর, শাহবাগ, ঢাকা-১০০০, বাংলাদেশ।
ফোন: +৮৮-০২-৪১০৬৪১১১, ৪১০৬৪১১২, ৪১০৬৪১১৩, ৪১০৬৪১১৪, ফ্যাক্স: +৮৮-০২-৯৬১১৬০৪,হটলাইন : +৮৮-০১৯২৬৬৬৭০০৩-৪
ই-মেইল : [email protected], [email protected], [email protected], [email protected], web : www.gonokantho.com