শিরোনাম |
অভাবনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() অভাবনীয় ব্যাটিং ব্যর্থতায় বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ ম্যাচ জিতলেই মিলত সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার টিকেট। এমন মহাগুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার চরম প্রদর্শণীতে ৮ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশের মেয়েরা। সেন্ট কিটসে বাংলাদেশ সময় শনিবার সকালে শেষ হওয়া ম্যাচে ১ উইকেটে ৬৮ থেকে স্রেফ ১১৮ রানে গুটিয়ে যায় নিগার সুলতানার দল। সহজ রান তাড়ায় ক্যারিবিয়ানরা জিতে যায় ২৭.৩ ওভারেই। স্বাগতিক ভারতসহ আইসিসি উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের শীর্ষ ছয় দল সরাসরি খেলবে এবারের ওয়ানডে বিশ্বকাপে। এই ম্যাচটি জিতলে পাঁচ নম্বরে থেকে বিশ্বকাপ খেলতে পারত বাংলাদেশ। কিন্তু হেরে যাওয়ায় তারা রয়ে গেল সাত নম্বরে। সমান (২১) পয়েন্ট নিয়েও জয় একটি বেশি থাকায় সরাসরি বিশ্বকাপে জায়গা করে নিল নিউজিল্যান্ড। বাংলাদেশের সুযোগ অবশ্য শেষ হয়ে যায়নি। নিগার সুলতানার দলকে এখন বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে হলে উতরাতে হবে বাছাইপর্ব। তিন ম্যাচের এই সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাছাইয়ে খেলা নিশ্চিত ছিল আগেই। এই বছর অগাস্ট-সেপ্টেম্বরে বিশ্বকাপের আগে ভারতেই হবে বাছাইপর্ব। বাংলাদেশ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ছাড়া উইমেন’স চ্যাম্পিয়নশিপের তলানির অন্য দুই দল পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ড থাকবে বাছাইয়ে। সঙ্গে থাকবে র্যাঙ্কিং থেকে আসা থাইল্যান্ড ও স্কটল্যান্ড। ছয় দলের বাছাইপর্ব থেকে দুই দল খেলবে বিশ্বকাপে। ওয়ার্নার পার্কে টস জিতে ব্যাটিং নেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। আগের ম্যাচে ১৮৪ রানের পুঁজি নিয়েও ৬০ রানের জয় ধরা দিয়েছিল দারুণ বোলিং পারফরম্যান্সে। সেটিই হয়তো ভাবনায় ছিল অধিনায়কের। কিন্তু এবার তো বোলারদের লড়াই করার মতো পুঁজিই এনে দিতে পারলেন না ব্যাটাররা। দ্বিতীয় ওভারেই মুর্শিদা খাতুনকে (১) হারায় বাংলাদেশ। বড় ভরসা ফারজানা হক ও সাম্প্রতিক সময়ে সেরা ব্যাটার শারমিন আক্তার এরপর দলকে এগিয়ে নেন কিছুটা। তবে ক্যারিবিয়ানদের আঁটসাঁট বোলিংয়ে রান বের করতে পারছিলেন না থিতু হওয়া এই দুই ব্যাটার। ২০তম ওভারে অ্যাফি ফ্লেচারের লেগ স্পিনে এলবিডব্লিউ হন ফারজানা। ৬৫ বলে কেবল একটি চারে ২২ রান করতে পারেন অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। অধিনায়ক নিগার নামার পরও রানের গতি বাড়েনি। একটু পর ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক হেইলি ম্যাথিউসের বলে মিড অফে ক্যাচ দেন শারমিন। পাঁচটি চারে ৫৮ বলে ৩৭ রান আসে তার ব্যাট থেকে। আগের ম্যাচে এরকম অবস্থা থেকেই দলকে টেনে নিয়ে ফিফটি করেছিলেন নিগার। কিন্তু অধিনায়কও ব্যর্থ এ দিন (২৯ বলে ১১)। এরপর সেই ধ্বসের গল্প। অভিজ্ঞ ফাহিমা খাতুন (৭) পারেননি দলের প্রয়োজনে দাঁড়াতে। আগের দুই ম্যাচে ২৯ ও ২১ রান করা স্বর্ণা আক্তার এবার ফেরেন শূন্যতে। লোয়ার অর্ডারে যাদের ব্যাটে একটু তাকিয়ে থাকে দল, সেই রাবেয়া খান ও নাহিদা আক্তারও রানের খাতা খুলতে পারেননি। লেগ স্পিনার ফ্লেচারের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের পর বাঁহাতি স্পিনার জাইদা জেমস ও অফ স্পিনার কারিশ্মা রামহারাক মিলে গুড়িয়ে দেন বাংলাদেশের ব্যাটিং। ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে রামহারাক নেন ১২ রানে ৪ উইকেট। অল্প পুঁজি নিয়ে বাংলাদেশের বোলাররা পারেননি লড়াই করতে। প্রথম ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হেইলি ম্যাথিউসকে এবার ২২ রানে ফেরান নাহিদা। আরেক ওপেনার কিয়ানা জোসেফ ৩৯ রান করে আউটহন মারুফা আক্তারের বলে। বল হাতে বাংলাদেশের সাফল্যের গল্প শেষ সেখানেই। শিমেইন ক্যাম্পবেলকে নিয়ে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন ডেন্ড্রা ডটিন। ৪৭ বলে ২২ রানে অপরাজিত থকেন ক্যাম্পবেল, অভিজ্ঞ ডটিন ১৯ বলে করেন ৩৩। সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৪৩.৫ ওভারে ১১৮ (ফারজানা ২২, মুর্শিদা ১, শারমিন ৩৭, নিগার ১১, সোবহানা ২৫, ফাহিমা ৭, স্বর্ণা ০, রাবেয়া ০, নাহিদা ১, মারুফা ০*, তৃষ্ণা ০; ডটিন ৫-০-১৬-০, ফ্রেজার ৪-০-২৪-১, অ্যালেইন ১-০-৯-০, ম্যাথিউস ১০-৩-১৯-১, ফ্লেচার ১০-০-২২-১, জাইদা ৭-২-১৫-২, রামহারাক ৬.৫-০-১২-৪। ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৭.৩ ওভারে ১২২/২ (ম্যাথিউস ২২, জোসেফ ৩৯, ক্যাম্পবেল ২৫*, ডটিন ৩৯*; মারুফা ৭-১-৩৯-১, তৃষ্ণা ৩-০-১৩-০, নাহিদা ৬-০-২৫-১, ফাহিমা ৪-০-১৫-০, রাবেয়া ৭-০-২২-০, সোবহানা ০.৩-০-৭-০)। ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৮ উইকেটে জয়ী। সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী। প্লেয়ার অব দা ম্যাচ: কারিশ্মা রামহারাক। প্লেয়ার অব দা সিরিজ: কারশ্মা রামহারাক। |