শিরোনাম |
বাতিল হলো পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন
নিজস্ব প্রতিবেদক :
|
![]() বাতিল হলো পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) প্রধান উপদেষ্টা এ ঘোষণা দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহম্মদ। তিনি বলেন, পাসপোর্ট প্রদানের জন্য পুলিশ ভেরিফিকেশনের বিধান বাতিল করেছে সরকার, পাসপোর্ট পাওয়া নাগরিক অধিকার। প্রধান উপদেষ্টা আজ ডিসি সিম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেন। এর আগে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন নাগরিকের পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশন বাতিলের সুপারিশ করে। প্রাপ্ত তথ্যমতে, ১৯২০-এর দশকে ব্রিটিশ শাসনামলে পুলিশ ভেরিফিকেশন প্রথা চালু হয়। চাকরি, পাসপোর্ট, লাইসেন্সসহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে আবেদনকারীর তথ্য যাচাইয়ের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া ছিল। এর মাধ্যমে প্রার্থীর চারিত্রিক ও সামাজিক অবস্থানও যাচাই করা হতো। তখন এই প্রথার মূল উদ্দেশ্য ছিল ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন দমন করা এবং চাকরিপ্রার্থীদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা। কারণ সেসময় ব্রিটিশ কর্মকর্তারা ভারতবর্ষে নানা ধরনের গুপ্ত বা প্রকাশ্য হামলার শিকার হতেন। ব্রিটিশরা তখন চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন’ প্রথা চালু করেছিলেন, যাতে নিশ্চিত করা যায় যে প্রার্থীর কোনো ব্রিটিশবিরোধী রাজনৈতিক বিশ্বাস নেই। তবে বর্তমানে এই প্রক্রিয়া অনেক ক্ষেত্রেই বিরোধী মতাদর্শকে দমন, বৈষম্য সৃষ্টি এবং হয়রানির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর সচিবালয়ে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সঙ্গে গণমাধ্যমকর্মীদের মতবিনিময় সভায় পাসপোর্ট করার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন না রাখার সুপারিশ করেন জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রধান আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী। কমিশন প্রধান উল্লেখ করেন, পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধ করা অত্যন্ত জরুরি। প্রার্থীর বা তার পরিবারের রাজনৈতিক পরিচিতি যাচাই করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। বর্তমান ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়া একটি বড় সমস্যায় পরিণত হয়েছে। এটি বন্ধ করতে হবে। কেননা এটি চরম হয়রানির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আব্দুল মুয়ীদ চৌধুরী ওই মতবিনিময় সভায় আরও বলেন, ‘চাকরি কিংবা অন্যান্য সেবার ক্ষেত্রে পুলিশ ভেরিফিকেশন আর বাধ্যতামূলক না রাখার সুপারিশ করেছি। এটি কোথাও আর থাকবে না। তা ছাড়া নাগরিক হিসেবে পাসপোর্ট পাওয়া সবার অধিকার। উন্নত দেশে পাসপোর্ট সরাসরি আবেদনকারীর ঠিকানায় পৌঁছে যায়। এখানেও সেই পদ্ধতি চালু করতে হবে।’ পুলিশ সংস্কার কমিশন গত ১৯ নভেম্বর এক সুপারিশে জানায়, চাকরি ও পাসপোর্ট ভেরিফিকেশনের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা যাচাই বন্ধ করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কমিশনের প্রধান সফর রাজ হোসেন বলেন, ‘ভেরিফিকেশনের নামে হয়রানি ও দুর্নীতি বন্ধ হওয়া জরুরি। প্রার্থী বা তার পরিবারের রাজনৈতিক পরিচিতি বিচার করা অযৌক্তিক।’ প্রসঙ্গত, গত বছর মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) কর্তৃপক্ষ পুলিশ ভেরিফিকেশন বাদ দিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্র দেখে পাসপোর্ট দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব দেয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পুলিশের বিশেষ শাখায় মতামত চাওয়া হলে দ্বিমত পোষণ করে পুলিশের বিশেষ শাখা (এসবি)। |